বেদে ঈশ্বরকে বর্ণনা করা হয়েছে:
"পরম সত্যকে তিনটি পর্যায়ে উপলব্ধি করা যায়, এবং সকলেই একই রকম। পরম সত্যকে জানার এই পর্যায়গুলিকে ব্রহ্ম, পরমাত্মা ও ভগবান হিসাবে প্রকাশ করা হয়। (ভাগবত পুরাণ ১.২.১১)
ব্রাহ্মণ = নিরাকার, সর্বব্যাপী। কিন্তু পরমাত্মা বা ভগবানের গুণাবলী এই নিরাকার পরমব্রহ্মের ভিতর নেই।
পরমাত্মা = পরমাত্মা রুপে, প্রতিটি জীবদেহের মধ্যে অবস্থান করেন এবং এই পরমত্মার মধ্যে ঈশ্বরের ব্রহ্ম বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত কিন্তু ভগবান এর গুণাবলী পরমাত্মার ভিতর নেই।
ভগবান = পরম ব্যক্তি, যিনি সমস্ত সম্পদ, সৌন্দর্য, শক্তি, জ্ঞান, খ্যাতি এবং ত্যাগ → পূর্ণ অধিকারী। এই ভগবানের ভিতর পরমাত্মা ও ব্রহ্মের সমস্ত গুণাবলী বিদ্যমান।
অতএব, বেদ মতে, ভগবান এর উপলব্ধিই হচ্ছে ঈশ্বরের চূড়ান্ত উপলব্ধি।সকল বৈদিক শাস্ত্রে আর সেই পরম প্রভু বা ভগবান কে ভগবান শ্রীকৃষ্ণরূপে গ্রহণ করা হয়েছে।
সকল বেদের সারমর্ম ভগবদ্গীতায় (গিতোপনিশদ), এ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব নিম্নরূপঃ
ভগব্দগীতা ৫ম অধ্যায় ২৯ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ আমাকে সমস্ত যজ্ঞ ও তপস্যার পরমভোক্তা, সর্বলোকের মহেশ্বর এবং সমস্ত জীবলোকের সুহৃদরূপে জেনে যোগীরার জড় জগতের দুঃখ-দুর্দশা থেকে মুক্ত হয়ে হয়ে শান্তি লাভ করে।
ভগব্দগীতা ৭ম অধ্যায় ৭ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ হে ধনঞ্জয়! আমার থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই। সূত্রে যেমন মনিসমূহ গাথা থাকে, তেমনি সমস্ত বিশ্ব আমাতে ওতঃপ্রোত ভাবে অবস্থান করে।
ভগব্দগীতা ৭ম অধ্যায় ১০ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ হে পার্থ! আমাকে সবকিছুর সনাতন কারণ বলে জানবে। আমি বুদ্ধিমানের বুদ্ধি, তেজস্বীদের তেজ।
ভগব্দগীতা ৭ম অধ্যায় ১৯ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্বকারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন। সেই রূপ মহাত্মা অত্যন্ত দূর্লভ।
ভগব্দগীতা ৯ম অধ্যায় ১৭ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ আমিই এই জগতের পিতা, মাতা, বিধাতা ও পিতামহ।আমিই জ্ঞেয় বস্তু , শোধকারী ওঙ্কাঁর।আমিই ঋক ,সাম ও যজর্বেদ।
ভগব্দগীতা ১০ম অধ্যায় ৮ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ আমিই জড় ও চেতন জগতের সবকিছুর উৎস। সবকিছু আমার থেকেই প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে পন্ডিতগণ শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করে।
ভগব্দগীতা ১০ম অধ্যায় ২০ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ হে গুড়াকেশ! আমি সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থিত পরমাত্মা।আমিই সর্বভূতের আদি , মধ্য ও অন্ত।
ভগব্দগীতা ১০ম অধ্যায় ২৩ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ রুদ্রদের মধ্যে আমি শিব, যক্ষ ও রাক্ষসদের মধ্যে আমি কুবের, বসুদের মধ্যে আমি অগ্নি এবং পর্বত সমূহের মধ্যে আমি সুমেরু।
ভগব্দগীতা ১৫শ অধ্যায় ১৫ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ আমি সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থিত এবং আমার থেকেই স্মৃতি , জ্ঞান ও বিলোপ হয়। আমিই সমস্ত বেদের জ্ঞাতব্য এবং আমিই বেদান্তকর্তা ও বেদবিৎ।
ভগব্দগীতা ১৫শ অধ্যায় ১৮ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ যেহেতু আমি ক্ষরের অতীত এবং অক্ষর থেকে ও উত্তম, সেহতু জগতে ও বেদে আমি পুরুষোত্ত্বম নামে বিখ্যাত।
ভগব্দগীতা ১৫শ অধ্যায় ১২-১৩ নাম্বার শ্লোকঃ
অনুবাদঃ অর্জুন বললেন- তুমি পরম ব্রহ্ম , পরম ধাম, পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ। তুমি নিত্য , দিব্য, আদি দেব, অজ ও বিভু। দেবর্ষি নারদ , অসিত , দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেইভাবেই বর্ণনা করেছেন এবং তুমি নিজেও এখন আমাকে তা বলছ।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে সবকিছুর মালিক ও নিয়ন্তা হিসেবে স্বীকার করেছেন , ভগবান শিব, ভগবান ব্রহ্মা, ব্যাসদেব, নারদ মুনি, শঙ্করাচার্য, রামানুজাচার্য, মাধবাচার্য, বিষ্ণু স্বামী, নিমবার্কাচার্য, ভীষ্মদেব, দেবল ঋষি, অসিতা মুনি, শুকদেব গোস্বামী, বালি মহারাজা, যমরাজ, চতুষকুমার ইত্যাদি।
আদি শঙ্করাচার্য যিনি শিবের অবতার ছিলেন তানার একটি ভজ গোবিন্দ গ্রন্থে শ্রীকৃষ্ণকে ভজন করতে বলেছেন।
আচার্য শংকরাচার্য কাশীতে (বেনারস) তাঁর বিখ্যাত তীর্থযাত্রার সময় ভজগোবিন্দম রচনা করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। চৌদ্দ জন শিষ্য তাঁর সঙ্গে ছিলেন বলে জানা যায়। কাহিনীটি এমন, যখন তিনি কাশীর রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখন একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে পাণিনির লেখা সংস্কৃত ব্যাকরণ শেখার চেষ্টা করতে দেখে তিনি কষ্ট পান। আচার্য শংকরাচার্য এই দৃশ্য দেখে তিনি খুব কষ্ট পেলেন যে এই বৃদ্ধ তার যুবক বয়সে একটি ভাষা শিক্ষার জন্য এত সময় নষ্ট করেছে , তার জীবনের অবশিষ্ট মূল্যবান সময় একটি ভাষা শেখার অপচয় না করে ঈশ্বরের পূজা করার জন্য ব্যবহার করা তার পক্ষে উচিত ছিল। এর ফলে শ্রী শংকরাচার্য এই ভজ গোবিন্দ গ্রন্থ লেখেন। আচার্য শংকরাচার্য লোকটিকে ঈশ্বরের সাধনায় মনোনিবেশ করতে বললেন এবং ভাষা শিখার চেষ্টা করতে মানা করলেন। আচার্য যখন লোকটিকে বোকা (মূঢ়) বলে অভিহিত করেন, এবং তার নিন্দা করেন। ভজগোবিন্দ গ্রন্থ্যে মোট ৩৩ টি শ্লোক আছে যেখানে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ভজনা করতে বলা হয়েছে। অন্য কিছু করে পান্ডিত্য অর্জন করে বৃথা সময় যাতে মানুষ নষ্ট না করে তার জন্য শংকরাচার্য এই গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন।
ভজ গোবিংদং ভজ গোবিংদং
গোবিংদং ভজ মূঢমতে ।
সংপ্রাপ্তে সন্নিহিতে কালে
নহি নহি রক্ষতি ডুক্রিংকরণে ।। ১।।
সর্বোচ্চ প্রভু বেদে আরও বর্ণনা করা হয়েছে:
"পরম প্রভু অন্য সকল নিয়ন্ত্রকের নিয়ন্ত্রক, এবং তিনি বৈচিত্র্যময় গ্রহনেতাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। সবাই তাঁর নিয়ন্ত্রণে আছে। সকল সত্তাকে শুধুমাত্র সর্বোচ্চ প্রভু কর্তৃক নির্দিষ্ট ক্ষমতা দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়; তারা নিজেদের সর্বোচ্চ নয়। তিনি সকল দেবতা দ্বারা পূজা করা হয় এবং সকল পরিচালকের সর্বোচ্চ পরিচালক। অতএব, তিনি সকল প্রকার বস্তুগত নেতা ও নিয়ন্ত্রকদের প্রতি অতিক্রম করেন এবং সকলের দ্বারা ইবাদত করেন। তিনি ছাড়া আর কেউ নেই, আর তিনিই সব-কিছুর সর্বোচ্চ কারণ।
"সাধারণ জীবিত সত্তার মত শারীরিক রূপ ধারণ করে না। তাঁর শরীর ও তাঁর আত্মার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সে একদম। তাঁর সকল ইন্দ্রিয়ই অতিক্রমকারী। তাঁর যে কোন ইন্দ্রিয় অন্য যে কোন ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়া সম্পাদন করতে পারে। অতএব, তাঁর চেয়ে বড় কেউ তাঁর চেয়ে বড় নয় বা তাঁর সমতুল্য কেউ নয়। তাঁহার শক্তি বহুমুখী, এবং এইভাবে তাঁহার কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি প্রাকৃতিক অনুক্রম রূপে সঞ্চালিত হয়। (শ্বেতাসভাতারা উপনিসাদ ৬.৭-৮)
Comments50
cialis genuinerx net viagra viagra viagra
augmentin vs doxycycline for parotiditis infection
how to take 20mg generic cialis
krjzvjly
ngknjula
mkiryfym
fnutudxk
jfgiemwx
bxndaiiyaa
vwmzhfob
eyuriuab
zpynnenk
hmbedsxdry
yfjoonty
ntjyclwt
myxoeqtr
eximginq
grhqmtjc
pofjygfq
aomadmuo
qoufjiaq
daphbwsr
xkqgffad
hzeftgyz
fwaiwkuni
fzihhicl
gdsquakr
telpvmit
adoyxzao
gowvdkcrvk
pnzcllqt
lqrwxhuy
ozreyeko
fddmqvky
gkqcoodr
ucsqpbsp
gwirabop
vapzcalh
pgxqamrz
pnjlfslx
tazeegcz
zqwitiog
orupdsuh
rfdmkboe
mzmjclpn
cltayvhmd
aqjafztw
zoohvxbo
gonsljss
deojfznv