ভারত একটি বৈচিত্রময় দেশ।এখানে হাজারো সংস্কৃতি বিরাজমান।এটা বহুভাষী দেশ।কিন্তু সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এদেশের বেশির ভাগ লোক হিন্দু(সনাতন) ধর্মের অনুসারী। এত ভাষা এত সংস্কৃতির পার্থক্য হওয়া সত্ত্বেও এদেশের সব মানুষ এক মেল বন্ধনে সবার সাথে সবাই যুক্ত। আর এই বন্ধনের নাম সনাতন বন্ধন। এই হিন্দু(সনাতন) ধর্মের কারনেই ভারত আজ দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের মানুষ সনাতন ধর্ম পালন করে আসছে।
ভারতে মুঘলরা যখন শাসন করা শুরু করেছিল, তার কয়েক হাজার বছর পূর্ব থেকেই ভারতের মানুষ সনাতন ধর্ম পালন করে আসছে।
আওরঙ্গজেব অনেক চেষ্টা করেছিল হিন্দু ধর্মকে ভারত থেকে চিরতরে মুছে দিতে, কিন্তু সেটা করতে গিয়ে নিজের সাম্রাজ্যের পতন ডেকে এনেছিল। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ও হিন্দু ধর্মকে দাবানোর অনেক চেষ্টা করতে গিয়ে ১৯৪৭ সালে তারাই ভারত থেকে বিতাড়িত হইয়েছিল।
প্রকৃতপক্ষে এই ১৯৪৭ সালেই হিন্দু ধর্মের এক পুনর্জাগরন ঘটে ছিল এটা আপনি মনে করতে পারেন , কিন্তু এই হিন্দু জাগরনের জন্য কোন ব্যক্তি দায়ী নয়। এমনকি আমাদের প্রথম প্রধান মন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ও নয়।তাছাড়া জহরলাল নেহেরুর কমিউনিস্ট রাজনিতি ও তাদের আদর্শের সাথে খুবই ঘনিষ্টভাবে যুক্ত ছিলেন এবং তিনি চাইতেন ভারতে হিন্দু সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাক।
কমিউনিস্ট মতমাদ যেকোন দেশের মূল সংস্কৃতি, ধর্মকে পুরোপুরিভাবে ধংস করে।এবং সে দেশের মূল ধর্ম ও সংস্কৃতি কে ছোট করে দেখায়।
মাও সেতুং চাইনিজ লোকদের চীনের মূল সংস্কৃতিকে ছোট করতে শিক্ষা দিয়েছিল , যদিও চীনের মূল সংস্কৃতি হাজার বছরেরও পুরানো।
একই ভাবে আমেরিকান ও বৃটিশ কমিউনিস্ট মতবাদিরাও ওই দেশের খৃস্টিয়ানিটি ,তাদের সাদা চামড়া ও তাদের সারা বিশ্বের সম্রাজ্যবাদের যে অহংকার তাও নিচু হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছিল।
একইভাবে মুঘল ও বৃটিশ আমলে হিন্দু সংস্কৃতিকে ছোট ও হেয় করে দেখিয়ে মুঘল ও বৃটিশদের সংস্কৃতিকে উচুমানের করে দেখানোর জন্য চেষ্টা চালানো হয় এবং তারা অনেকাংশে সফল ও হয়েছিল। যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয় তাহলে এখনি স্কুল জীবনের বইগুলো একটু ঘেটে দেখেন, সেখানে মুঘল ও বৃটিশদের সংস্কৃতি , শৌর্য , ক্ষমাতাকে কত বড় করে দেখান হয়েছে এবং হিন্দু সংস্কৃতিকে কতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। আপনি সমাজের দিকে একটু খেয়াল করে দেখবেন হিন্দুরা তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অন্যদের মাঝে তুলে ধরতে সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু খৃস্টান ও মুসলিম ধর্মের লোকেরা গর্বের সাথে তাদের ধর্মীয় ভাব ধারা সবার মাঝে প্রকাশ করে থাকে। যদিও হিন্দু(সনাতন) ধর্ম অনেক প্রাচীন ও অন্য ধর্ম থেকে সমৃদ্ধশালী।
ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী ১৯৬৫ সালের দিকে ভারতে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করবেন বলে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি এটি করতে সমর্থ হন নি। তাছাড়া তেমন কোন পরিবর্তন ভারতে হয় নি, বরং ভারতীয়রা বেশি বেশি বৃটিশদের সংস্কৃতি নিজের করে নিয়েছিল। ভারতে হিন্দুত্ববাদ কে একটি সাম্প্রদায়িক ত্বকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেটি শুধু ঘরের মধ্যেই সিমাবদ্ধ ছিল, বাইরে প্রকাশ নিষিদ্ধ ছিল এবং বাইরে যদি হিন্দুত্ব বাদ প্রকাশ করা হয় তাহলে তাকে সাম্প্রদায়িক বলা হত।
আরএসএস এক সময় একদল অস্পৃশ্য দল হিসেবে হিসেবে পরচিত ছিল। হিন্দু ঐতিহ্যের তকমার কারণে বিজেপি একা শাসন করতে পারেনি বরং বিজেপিকে জোটসঙ্গীদের দ্বারা "নিয়ন্ত্রণে" থাকতে হয়েছে। ২০০৪ সালের আগে অটলবিহারী বাজপেয়ীও খুব বেশি পরিবর্তন করতে পারেননি এবং তাকেও সিস্টেমের মধ্যে থাকতে হয়েছে । আর এই কারনে অনেক কট্টরপন্থী আরএসএস সমর্থক তাকে "কংগ্রেসি" বলে বরখাস্ত করেছে।
সোনিয়া গান্ধী তার ১০ বছরের ইউপিএ শাসন আমলে হিন্দুত্ব বিরোধী প্রপাগান্ডা চালনাকে একটি বৃহত্তর উচ্চতায় নিয়ে যান। তিনি নিজে একজন রোমান ক্যাথলিক ছিলেন যিনি তার সরকার ব্যবস্থায় নিয়োজিত করেন একজন শিখকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, একজন খ্রিস্টানকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে এবং একজন মুসলিম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োজিত করেন। যদিও এতে কোন সমস্যা ছিলোন, কিন্তু হিন্দুধর্মের প্রতি তার ঘৃণা এর চেয়ে অন্যন্য দিকে বেশি উপায়ে প্রদর্শিত হয়েছে।
শিক্ষার অধিকার কার্যত "হিন্দু প্রাইভেট স্কুলে সংরক্ষণ" আইন পাশ করেন। তিনি হিন্দুদের প্রতারিত করে একটি সাম্প্রদায়িক বিল পাশকরার চেষ্টা করেন। ইতিহাসের বই এবং স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে আরো একটি সংশোধন করেন যা নেহরুর সেকুলার নীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়।
সেকুলার এবং বামপন্থি লবিকে আরো শক্তিশালী এবং বেশি বেশি হিন্দুধর্মের সমালোচনা এবং অপব্যবহার করতে উৎসাহিত করা হয়। এমনকি বলিউডেও হিন্দি সিনেমাতে হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করে ছবি বানান হয়, হিন্দু ধর্মকে নীচ হিসেবে উপস্তাপন করা হয়, হিন্দুদের দেব-দেবীদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা হয় , কিন্তু সেখনে মুসলিম ও খৃস্টন ধর্মকে আরো মহান ও সুন্দর হিসবে উপস্থাপন করা হয়।
যাইহোক, যা ২০১৪ সালে সবকিছু রাতারাতি বদলে যায়।
নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি গর্বের সাথে তার হিন্দু জাতীয়তাবাদ সরাসরি লালন করেন। আগে ভারতে, তার বিজেপি দলকে তিনি সাধারণ নির্বাচনে হয়তো ৪৪টি আসনে নিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু সেই ভাগ্য "ধর্মনিরপেক্ষ" কংগ্রেসের উপর পড়ে যখন বিজেপি ২৮২টি আসন পায়, এমনকি ২০০০-এর দশকেও অকল্পনীয়।
মোদী, তার এই জয়কে বারাণসীর দশশ্বমেধ ঘাটে গঙ্গা আরতির মাধ্যমে উৎযাপন করেছিলেন। কথায় বলে "যেয়ছি রাজা, বেয়ছি প্রজা" (রাজা যেমন প্রজারাও তেমনি হবে)। যাই হোক, আরো বেশী সংখ্যক ভারতীয় এখন তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদ লালন পালন করছে এবং তারা আর তাদের ধর্ম নিয়ে লজ্জিত নয়।
আরএসএস, এখনো হিন্দি বলয়ের মধ্যে সিমাবদ্ধ একটি সঙ্ঘ পরিবার, ক্রমশ এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এমনকি পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সহ দক্ষিণের কেরালা এবং তামিলনাড়ুর মত এলাকায় এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান আরো বেশী করে আরএসএস সদস্যরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।
এর পরি সমাপ্তি ঘটে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগী আদিত্যনাথের উত্থানের মাধ্যমে। যদি মোদীর উত্থান কে অসম্ভব বলে বিবেচনা করা হয়, তাহলে ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্রের নেতৃত্বে স্যাফরন(গেরুয়া)পোশাক পরা সাধু ছিল সহজ। কিন্তু এটাও ঘটেছে!
২০১৪ সালের আগে, কমিউনিজম মূলধারার প্রভাব ছিল এবং হিন্দুধর্ম খুব কোনঠাসা অবস্থায় ছিল।
২০১৪ সালের পর হিন্দুধর্ম মূলধারায় ফিরে এসেছে এবং কমিউনিজম এখন তার জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে।
এখন হিন্দুরা আরও বেশি করে হিন্দুরা উৎসব উদযাপনে গর্ব বোধ করছে। হোলির সময় পানি বাঁচাও বার্তা এবং ধোঁয়াহীন গোলমালহীন মুক্ত দীপাবলির আহ্বানে হিন্দুরা এখন পুরোপুরি ভ্রু কুঁচকেছে। শুধু টুইটারের দিকে , ফেসবুকের দিকে তাকালে দেখা যায় কট্টর হিন্দুদের ছড়াছড়ি, আর এটি দিন দিন বেড়েই চলছে।ফেসবুক টুইটার ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তারা প্রত্যেকে স্ব-ঘোষিত, স্ব-নির্মিত সংঘ তৈরি করে গেরুয়া টিকা লাগিয়ে উৎসব পালন করে।
বামপন্থিদের কাজ হচ্ছে কোন দেশের ধর্মকে ধ্বংস করা, কিন্তু তাদের পতন শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ঘটে চলেছে। বামপন্থী লেবার যুক্তরাজ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় জিতেছেন। মারিন লে পেন ফ্রান্সের একজন ফ্রন্টরানার। এখন এটা একটা বৈশ্বিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
খুব শীঘ্রই পশ্চিমারা খ্রিস্টান ধর্ম উদযাপন করবে এবং ভারত হিন্দুধর্মকে বড় ভাবে উদযাপন করবে। আরেকটি কারণ হচ্ছে যে হিন্দুধর্মে সম্ভবত নাস্তিকদের সংখ্যা অনেক বেশি(হিন্দু ধর্মে নাস্তিকদের স্বীকার করে) ।যারা এতদিন চুপ করে ছিল যখন হিন্দুধর্মের উপর অনেক দমন-পীড়ন করা হচ্ছিল, কিন্তু এখন নাস্তিকেরাও হিন্দু ধর্ম রক্ষার জন্য সোচ্চার হয়েছে।
যোগী আদিত্যনাথ এখানেই শেষ নয়, শুধু শুরু।কোন একটি দেশের শিক্ষা ও দেশের সংস্কৃতি কে কাজে লাগানোর একটি বড় হাতিয়ার হচ্ছে সে দেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। স্মৃতি ইরানি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হন আরো কট্টরপন্থী প্রকাশ জাভড়েকর, যিনি আরো পরিবর্তন করছেন।
জাভড়েকর তার ছাত্র জীবনে এবিভিপির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং স্মৃতি ইরানির চেয়ে আরো বেশি কট্টর পন্থি বিজেপি। কোন বিতর্ক ছাড়াই প্রকাশ জাভড়েকর চুপচাপ এবং দ্রুততার সাথে সবকিছুর পরিবর্তন করে চলেছেন , এবং আপনারা দেখতে পাবেন কিভাবে বামপন্থি লবিগুলো ইতোমধ্যে হাল ছেড়ে দিয়েছে।
রাজনৈতিক হ্যান্ডবুক, একাডেমিক পাঠ্যপুস্তক, ইতিহাসের বই সবকিছুই ধীরে ধীরে পুনর্লিখন চলছে এবং ভবিষ্যতে বৃহত্তর শক্তি সংঘটিত হতে চলেছে , যার ফলে মোদীর ২০১৯ জেতার একটি কারন।২০১৯ সালে মোদী ক্ষমতায় আসার পরথেকে সবকিছুই এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিতর্কিত রাম মন্দিরের এজেন্ডা ও সমাধান হয়ে গেছে। আসলে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে হিন্দুরের সম্মান বেড়ে গিয়েছে এই রাম মন্দির বানানোর রায় হিন্দুদের পক্ষে যাওয়ার পর থেকে। ধীরে ধীরে হিন্দুরা তাদের পুরান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ফিরে পাচ্ছে।এখন হিন্দুরা তাদের ধর্ম নিয়ে অনেক সচেতন, কোন শক্তি আর তাদের দাবিয়ে রাখতে পারার ক্ষমতা রাখেনা। ভারতে এক বিশাল হিন্দুত্বের নবজাগরন ভবিষ্যতে ঘটতে চলেছে।মোদীর এই দুইবার ক্ষমতায় আসার ফলে হিন্দুত্বের নবজাগরন গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
২০১৪ সালের আগেকেউই তিনতালাক বিরোধি আইন ও রাম মন্দিরের সমস্যা সমাধান নিয়ে চিন্তাই করতে পারেনি।
লাল মারা গেছে। গেরুয়া চালু হয়েছে । মহান সনাতন হিন্দু ধর্মের পুনরুত্থান শুরু হয়েছে।
Comments5
cialis 5mg price uk
can doxycycline treat urinary infection
propecia finasteride over the counter
buy priligy viagra order stromectol 12mg
vidalista 20mg recall on albuterol inhaler